নিজস্ব প্রতিবেদক, জকিগঞ্জ টুডে:: সিলেটের জকিগঞ্জে সাংবাদিক সেজে নবনিযুক্ত ওসির সঙ্গে বৈঠক করেও রেহাই মেলেনি বহু পরিচয়ধারী এটিএম ফয়ছলের। প্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার বিকেলে সিলেট নগরী থেকে চাঁদাবাজী মামলায় তাকে গ্রেফতার করেছে জকিগঞ্জ থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত এটিএম ফয়ছলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী মামলায় সিলেটের আদালতে (দায়রা-৪৮/২১) গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিলো। কিন্তু আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানা থাকার পরও সম্প্রতি থানায় যোগদানকৃত ওসি মো. মোশারফ হোসেনের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলার চেষ্টায় অভ্যর্থনা জানাতে থানায় যায় এটিএম ফয়ছলসহ তার সংগঠিত চক্রের সদস্যরা। থানায় অবস্থানকালে তারা নিজেদেরকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ওসির সঙ্গে বৈঠক করে ছবি তোলেন। পরে ফেসবুকে পোস্ট করেন ‘সাংবাদিকদের সঙ্গে ওসির মতবিনিময়’। ফেসবুকে এমন ছবি দেখে ঘটনাটি নিয়ে বির্তক এবং একাধিক গণমাধ্যমে গত সোমবার সংবাদ প্রকাশিত হয়।
জানাগেছে, জকিগঞ্জের মানিকপুর ইউপির দরগাবাহারপুর গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে এটিএম ফয়ছল কখনো সাংবাদিক-সম্পাদক, কখনো রাজনীতিবীদ, কখনো মানবাধিকার কর্মী, আবার কখনো লেখক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, সংগঠক ও সমাজকর্মী পরিচয় দিয়ে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে। তার নানা অপকর্মে জকিগঞ্জের সাংবাদিকরাসহ বিভিন্ন মহল বিব্রকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন। ২০১৮ সালের পহেলা অক্টোবর জকিগঞ্জ শহরের হারিছ ট্রেডার্সের ম্যানেজার মাওলানা মুহি উদ্দিন মহসিনের ঝুলন্ত লাশ দরগাবাহারপুর গ্রামের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর প্রতারক এটিএম ফয়ছল শরীফ ট্রেডার্সের মালিক আবুল হারিছের কাছে নিজেকে সাংবাদিক দাবী করে ২০ হাজার টাকা চাঁদা চায়। চাঁদা না দিলে আবুল হারিছ তার ম্যানেজার মাওলানা মুহি উদ্দিন মহসিনকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখেছেন বলে পত্রপত্রিকায় ব্যাপক হারে সংবাদ প্রকাশের হুমকি দেন এবং লেখালেখি শুরু করলে অপমৃত্যুর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়ে আবুল হারিছ ফেঁসে যাবেন বলে জানান। এ ঘটনায় শরীফ ট্রেডার্সের মালিক আবুল হারিছ বাদী হয়ে জকিগঞ্জ থানায় এটিএম ফয়ছলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-০২/১১/১৮।
এ ব্যাপারে জকিগঞ্জ থানার নতুন ওসি মো. মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন, তিনি ১৯ ফেব্রæয়ারী থানায় যোগদান করেন। নতুন হিসেবে তিনি কাউকে চিনেন না এবং কারো ব্যাপারে অবগত নয়। এ সুযোগে সংবাদিক পরিচয় দিয়ে এটিএম ফয়ছলসহ কয়েকজন তাঁর কক্ষে গিয়ে দেখা করে ছবি তোলে ফেসবুকে ছাড়েন। আসলে যখন তাঁর সঙ্গে এটিএম ফয়ছলসহ তার সঙ্গীরা ছবি তুলেছে তখন পর্যন্ত ওয়ারেন্ট ছিলো না। যখন থানায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা এসেছে তখনই তিনি তাকে সিলেট নগরী থেকে প্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেফতার করেছেন।
Leave a Reply